পেটে এক ধরনের পোকা জন্মায়, একেই বলে ‘কুমি’। কৃমি তিন রকমের। ছোট্ট সুতার মতো কৃমিকে বলে ‘কুঁচো’ কুমি। কেঁচোর মতো কৃমিকে বলে ‘কেঁচো’ কৃমি। আর ফিতার মতো লম্বা কৃমিকে বলে ‘ফিতা কৃমি। কৃমি যে শ্রেণীরই হোক, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভয়ংকর ক্ষতিকারক। সুতরাং কৃমিকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা দরকার।
কৃমি হওয়ার কারণ
বেশী মিষ্টদ্রব্য খেলে, অজীর্ণতা দোষে, কাঁচা ফলমূল খাওয়ার জন্য, পচা মাছ-মাংস খাওয়ার জন্য এই রোগ হয়ে থাকে।
কৃমি হলে লক্ষণ
পেটে কৃমি হলে ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়, নাক ও গুহ্যদ্বার চুলকায়, পেট ফাঁপে, মুখে দুর্গন্ধ হয়, মুখ দিয়ে জল ওঠে, ঘুমোতে ঘুমোতে দাঁত কিড়মিড় করে, পেটে বেদনা হয় প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণ বিচার করে রোগীকে ওষুধ খাওয়ালে কৃমিকে ধ্বংস করা যায়।
চিকিৎসা ঃ
কৃমি রোগের সর্বোৎকৃষ্ট ওষুধ—সিনা Q-২০০। ওষুধটি যে- কোনো ধরনের কৃমির জন্য রোগীকে খাওয়ানো চলে। এতে যদি উপকার না হয় তাহলে দিতে হবে—স্ট্যানাম 1x-৩০। কৃমির আরও একটি ভালো ওষুধ— স্যান্টোনাইন ১x। এ ওষুধটিও সকল রকম কৃমির জন্য রোগীকে খাওয়ানো চলে। প্রবল তৃষ্ণাবোধ, ভয় পাওয়া, হঠাৎ চমকে ওঠা প্রভৃতি লক্ষণে— বেলেডোনা ৩x। মুখমণ্ডল ফ্যাকাশে, চোখের চারপাশে নীল দাগ, বমি, বমি-বমি ভাব, পেটে শূলবেদনা প্রভুতি লক্ষণে— স্পাইজিলিয়া ৩। এই ওষুধটি কুঁচো’ কমি হলে খুব ভালো কাজ করে। কৃমির জন্য পেটে বেদনা, মুখে দুর্গন্ধ হলে—মার্ক সল ৬। কেঁচো কৃমির উৎকৃষ্ট ওষুধ—সিনা Q– ২০০ বা স্যান্টোনাইন ১x বিচূর্ণ। কুঁচো কৃমির উৎকৃষ্ট ওষুধ—স্পাইজিলিয়া ৩x, টিউক্রিয়াম ১x, স্যান্টোনাইন ১x। ফিতা কৃমির উৎকৃষ্ট ওষুধ—মারকিউরিয়াস- কর তন্ত্র, স্ট্যানাম এন্ত্র বিচূর্ণ, কিউপ্রাম অ্যাসেটিকাম ৩x।
বায়োকেমিক ঔষধঃ
Natrum Phos 3X
Natrum Mur 3X
Silicea 12X
উপরোক্ত ওষুধগুলি মিশিয়ে দিনে চারবার 2+2+2=6টি দানা খেলে কৃমি রোগের কারণে দাঁত পিষে যাওয়া, নাক চুলকানো প্রভৃতি উপসর্গে আশাব্যঞ্জক উপকার পাওয়া যায়।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :
কাঁচা ফলমূল খাওয়া কমাতে হবে। বাসী জিনিস খাওয়া চলবে না। প্রতিদিন সকালে চিরেতা-ভিজানো জল খেলে উপকার হবে। পলতা, উচ্ছে প্রভৃতি তেতো জিনিস মাঝে মাঝে খাওয়া দরকার। নিম-ঝোল এ রোগের পক্ষে খুবই হিতকর। কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। পুষ্টিকর অথচ লঘু খাদ্য আহার করলে কৃমির রোগীর পক্ষে উপকার হয়। মিষ্টদ্রব্য কম খাবার চেষ্টা করা উচিত। কৃমি বেশী হলে সরলান্ত্রে লবণ-মেশানো জল পিচকারি করে দিলে কৃমি নির্মূল হতে পারে।